- খবরদার একদম ঘরে ঢুকবে না, বাইরে দাঁড়িয়ে থাক ।
-- তাহলে দরজা খুলেছ কেন ?
-- দরজা খুলেছি তোমাকে দেখার জন্য ।
-- আমার অপরাধটা কি বলবে তো ?
-- তোমার কাছে ঘড়ি আছে ?
-- আছে তো
-- টাইম দেখ কয়টা বাজে
-- দশটা টা বাজে মাত্র
-- অফিস ছুটি হয়েছে কয়টায় ?
-- কয়টায় আবার পাঁচটায়
-- তাহলে এতো দেরি হলো কেন ?
-- ইয়ে মানে রাস্তায় অনেক জ্যাম ছিল
-- জ্যাম ছিল না অন্য কোন মেয়ের সাথে টাঙ্কি মেরে আসলা ।
-- ছিঃ ছিঃ ছিঃ তুমি এই সব কথা বলতে পারলা । তুমি না আমার ময়না পাখি প্লীজ ঘরে ঢুকতে দেও । তোমার জন্য না একটা গিফট এনেছি
.
এই কথা বলে রিহান তার স্ত্রীর শ্রাবন্তি কে বাহু ডোরে জড়িয়ে ঘরে প্রবেশ করে । আসলে গাড়ির জ্যাম টেম কিছুই না । রাস্তায় কলেজ লাইফের বন্ধুদের সাথে দেখা আর সেখানেই দেরি । বন্ধুদের আড্ডায় মেতে থাকায় শ্রাবন্তির কথা ভুলেই গিয়েছিল ।
.
-- কই দেখি আমার জন্য কি গিফট এনেছ ।
-- তাহলে চোখ বুঁজ
.
শ্রাবন্তি চোখ বুজে কিন্তু রিহানের ফাঁকিবাজি । আলতো করে শ্রাবন্তির কপালে একটা চুমে এঁকে দেয় ।
..
-- এটাই বুঝি তোমার গিফট
-- হ্যাঁ এটাই আমার গিফট । ভালোবাসার গিফট ।
-- কিন্তু তোমাকে আজ একটা গিফট দিব সেই গিফটের কথা শুনলে তুমি পাগল হয়ে যাবে ।
-- কি সেটা ।
-- তাহলে তুমিও চোখ বুঁজ ।
.
রিহান চোখ বুজে শ্রাবন্তি রিহানের কানে কাছে মুখ এনে আস্তে করে বলে সে কনসিভ করেছে ।
.
রিহান কথাটা শুনে কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে থাকে, তারপর চিৎকার দিয়ে ঘর উলট পালট করতে থাকে । শ্রাবন্তিকে পাজাকুলে নিয়ে কিছুক্ষণ লম্ফ জম্ফ করে । আসলে রিহান এতোটাই খুশি হয়েছে যে, যা কল্পনাতীত ।
.
দিন যায় মাস যায় শ্রাবন্তির গর্ভে ভ্রুণ বড় হতে থাকে । অন্যদিকে শ্রাবন্তি অসুস্থ হতে থাকে । স্বাভাবিক উপসর্গের বাইরে ও কিছু জটিলতায় শ্রাবন্তি অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে থাকে । রিহান এখন সময় মতো বাসায় ফেরে ঘরের কাজ গুলো শ্রাবন্তিকে করতে দেয়না । পরম মমতায় আর ভালোবাসায় শ্রাবন্তিকে আগলে রাখে । সময় মতো চেকআপ করা, ডাক্তার দেখানো কোন কিছুতেই ত্রুটি রাখে না, কিন্তু শ্রাবন্তির কেন যেন মনে হয় সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে সে মারা যাবে । তাই বারবার রিহান কে অনুরোধ করে আমার সন্তান কে দেখে রেখ । কোন রকম কষ্ট যেন সে না পায় সে, আমি হয়তো বাঁচবো না । রিহান শ্রাবন্তির মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে থাকে কিচ্ছু হবে না তোমার, এতো ভয় পেও নাতো ।
.
শ্রাবন্তির ব্যথা উঠেছে । ডাক্তারের তারিখ অনুযায়ী রিহান অফিস থেকে এক সপ্তাহের ছুটি নিয়ে রেখেছে আগেই । যেদিন খুব বেশী প্রয়োজন সেদিন রাস্তায় জ্যাম হয় প্রচুর । তবুও শত বিপত্তি পেরিয়ে শ্রাবন্তি কে ক্লিনিকে নিতে সক্ষম হয় রিহান ।
.
ডাক্তার জানিয়ে গেছেন স্বাভাবিক ডেলিভারি হবে না তাই প্রয়োজন সিজারের । কিন্তু রিহানের কেন যেন ভয় করছে । বারবার শ্রাবন্তির কথাটা মনে পড়ছে । তবুও অনুমতি দিতে বাধ্য হয়, কিছুই করার নেই
.
অপারেশন থিয়েটারের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে রিহান । অতীতের কথা গুলো মনে পড়ছে বারবার । শ্রাবন্তির সাথে খুনসুটি, ভালোবাসা , আদর, অভিমান । কতো স্মৃতিই না জড়িয়ে আছে এই ছোট্ট সংসার জীবনে । অসম্ভব রকমের ভালোবাসা পেয়েছে শ্রাবন্তির কাছ থেকে । আজ যদি শ্রাবন্তির কিছু হয়ে যায় তবে মনে হয়, তার পক্ষে বেঁচে থাকাই কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়বে । তবুও আল্লাহর ভরসা । আল্লাহ মহান অবশ্যই তার অমঙ্গল চাইবেন না তিনি ।
.
ভেতর থেকে বাচ্চার কান্নার শব্দ আসছে । রিহান যতটা না খুশি তার থেকে বেশি চিন্তিত শ্রাবন্তিকে নিয়ে । শ্রাবন্তির কি অবস্থা জানার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর অপারেশন থিয়েটার থেকে ডাক্তার বেরিয়ে আসলেন । মুখে স্মিত হাসি ।
.
-- Congratulations মিস্টার রিহান আপনি মেয়ের বাবা হয়েছেন ।
-- আলহামদুলিল্লহ্ , কিন্তু ডাক্তার শ্রাবন্তি কেমন আছে ?
-- হ্যাঁ, মা মেয়ে দুইজনেই ভালো আছে । সামান্য ব্লাডিং হয়েছিলো । এখন রোগী কে রক্ত দেওয়া হচ্ছে । আশা করি ঘন্টা দুই এক এর ভেতর সব ঠিক হয়ে যাবে
.
শ্রাবন্তির পাশে, সুন্দর ফুট ফুটে এক রাজ কন্যা কে নিয়ে বসে আছে রিহান । কি তুলতুলে শরীর । মায়াবি চেহারা । দেখতে তার মতোই হয়েছে । মনে হচ্ছে তার দিকে তাকিয়ে আছে । এই ছোট্ট বাবুর দিকে তাকিয়ে হাজার বছর পার করে দেওয়া যায় । শ্রাবন্তি রিহান কে জিজ্ঞেস করে তুমি খুশি হয়েছ ? রিহান শ্রাবন্তির দিকে টলমল চোখে তাকায় । এক সময় চোখের অশ্রু গড়িয়ে পড়ে । সেই গড়িয়ে পড়া অশ্রু টুকু বলে দেয় তার মতো খুশি এই মুহূর্তে পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই ।
-- তাহলে দরজা খুলেছ কেন ?
-- দরজা খুলেছি তোমাকে দেখার জন্য ।
-- আমার অপরাধটা কি বলবে তো ?
-- তোমার কাছে ঘড়ি আছে ?
-- আছে তো
-- টাইম দেখ কয়টা বাজে
-- দশটা টা বাজে মাত্র
-- অফিস ছুটি হয়েছে কয়টায় ?
-- কয়টায় আবার পাঁচটায়
-- তাহলে এতো দেরি হলো কেন ?
-- ইয়ে মানে রাস্তায় অনেক জ্যাম ছিল
-- জ্যাম ছিল না অন্য কোন মেয়ের সাথে টাঙ্কি মেরে আসলা ।
-- ছিঃ ছিঃ ছিঃ তুমি এই সব কথা বলতে পারলা । তুমি না আমার ময়না পাখি প্লীজ ঘরে ঢুকতে দেও । তোমার জন্য না একটা গিফট এনেছি
.
এই কথা বলে রিহান তার স্ত্রীর শ্রাবন্তি কে বাহু ডোরে জড়িয়ে ঘরে প্রবেশ করে । আসলে গাড়ির জ্যাম টেম কিছুই না । রাস্তায় কলেজ লাইফের বন্ধুদের সাথে দেখা আর সেখানেই দেরি । বন্ধুদের আড্ডায় মেতে থাকায় শ্রাবন্তির কথা ভুলেই গিয়েছিল ।
.
-- কই দেখি আমার জন্য কি গিফট এনেছ ।
-- তাহলে চোখ বুঁজ
.
শ্রাবন্তি চোখ বুজে কিন্তু রিহানের ফাঁকিবাজি । আলতো করে শ্রাবন্তির কপালে একটা চুমে এঁকে দেয় ।
..
-- এটাই বুঝি তোমার গিফট
-- হ্যাঁ এটাই আমার গিফট । ভালোবাসার গিফট ।
-- কিন্তু তোমাকে আজ একটা গিফট দিব সেই গিফটের কথা শুনলে তুমি পাগল হয়ে যাবে ।
-- কি সেটা ।
-- তাহলে তুমিও চোখ বুঁজ ।
.
রিহান চোখ বুজে শ্রাবন্তি রিহানের কানে কাছে মুখ এনে আস্তে করে বলে সে কনসিভ করেছে ।
.
রিহান কথাটা শুনে কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে থাকে, তারপর চিৎকার দিয়ে ঘর উলট পালট করতে থাকে । শ্রাবন্তিকে পাজাকুলে নিয়ে কিছুক্ষণ লম্ফ জম্ফ করে । আসলে রিহান এতোটাই খুশি হয়েছে যে, যা কল্পনাতীত ।
.
দিন যায় মাস যায় শ্রাবন্তির গর্ভে ভ্রুণ বড় হতে থাকে । অন্যদিকে শ্রাবন্তি অসুস্থ হতে থাকে । স্বাভাবিক উপসর্গের বাইরে ও কিছু জটিলতায় শ্রাবন্তি অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে থাকে । রিহান এখন সময় মতো বাসায় ফেরে ঘরের কাজ গুলো শ্রাবন্তিকে করতে দেয়না । পরম মমতায় আর ভালোবাসায় শ্রাবন্তিকে আগলে রাখে । সময় মতো চেকআপ করা, ডাক্তার দেখানো কোন কিছুতেই ত্রুটি রাখে না, কিন্তু শ্রাবন্তির কেন যেন মনে হয় সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে সে মারা যাবে । তাই বারবার রিহান কে অনুরোধ করে আমার সন্তান কে দেখে রেখ । কোন রকম কষ্ট যেন সে না পায় সে, আমি হয়তো বাঁচবো না । রিহান শ্রাবন্তির মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে থাকে কিচ্ছু হবে না তোমার, এতো ভয় পেও নাতো ।
.
শ্রাবন্তির ব্যথা উঠেছে । ডাক্তারের তারিখ অনুযায়ী রিহান অফিস থেকে এক সপ্তাহের ছুটি নিয়ে রেখেছে আগেই । যেদিন খুব বেশী প্রয়োজন সেদিন রাস্তায় জ্যাম হয় প্রচুর । তবুও শত বিপত্তি পেরিয়ে শ্রাবন্তি কে ক্লিনিকে নিতে সক্ষম হয় রিহান ।
.
ডাক্তার জানিয়ে গেছেন স্বাভাবিক ডেলিভারি হবে না তাই প্রয়োজন সিজারের । কিন্তু রিহানের কেন যেন ভয় করছে । বারবার শ্রাবন্তির কথাটা মনে পড়ছে । তবুও অনুমতি দিতে বাধ্য হয়, কিছুই করার নেই
.
অপারেশন থিয়েটারের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে রিহান । অতীতের কথা গুলো মনে পড়ছে বারবার । শ্রাবন্তির সাথে খুনসুটি, ভালোবাসা , আদর, অভিমান । কতো স্মৃতিই না জড়িয়ে আছে এই ছোট্ট সংসার জীবনে । অসম্ভব রকমের ভালোবাসা পেয়েছে শ্রাবন্তির কাছ থেকে । আজ যদি শ্রাবন্তির কিছু হয়ে যায় তবে মনে হয়, তার পক্ষে বেঁচে থাকাই কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়বে । তবুও আল্লাহর ভরসা । আল্লাহ মহান অবশ্যই তার অমঙ্গল চাইবেন না তিনি ।
.
ভেতর থেকে বাচ্চার কান্নার শব্দ আসছে । রিহান যতটা না খুশি তার থেকে বেশি চিন্তিত শ্রাবন্তিকে নিয়ে । শ্রাবন্তির কি অবস্থা জানার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর অপারেশন থিয়েটার থেকে ডাক্তার বেরিয়ে আসলেন । মুখে স্মিত হাসি ।
.
-- Congratulations মিস্টার রিহান আপনি মেয়ের বাবা হয়েছেন ।
-- আলহামদুলিল্লহ্ , কিন্তু ডাক্তার শ্রাবন্তি কেমন আছে ?
-- হ্যাঁ, মা মেয়ে দুইজনেই ভালো আছে । সামান্য ব্লাডিং হয়েছিলো । এখন রোগী কে রক্ত দেওয়া হচ্ছে । আশা করি ঘন্টা দুই এক এর ভেতর সব ঠিক হয়ে যাবে
.
শ্রাবন্তির পাশে, সুন্দর ফুট ফুটে এক রাজ কন্যা কে নিয়ে বসে আছে রিহান । কি তুলতুলে শরীর । মায়াবি চেহারা । দেখতে তার মতোই হয়েছে । মনে হচ্ছে তার দিকে তাকিয়ে আছে । এই ছোট্ট বাবুর দিকে তাকিয়ে হাজার বছর পার করে দেওয়া যায় । শ্রাবন্তি রিহান কে জিজ্ঞেস করে তুমি খুশি হয়েছ ? রিহান শ্রাবন্তির দিকে টলমল চোখে তাকায় । এক সময় চোখের অশ্রু গড়িয়ে পড়ে । সেই গড়িয়ে পড়া অশ্রু টুকু বলে দেয় তার মতো খুশি এই মুহূর্তে পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই ।